খরগোশ এর আয়ু হ্রাস
একটা খরগোশ এর গড় আয়ু হয় ১০-১২ বছর। যদি কেও সঠিকভাবে পালতে পারে তাহলে খরগোশ রা অনেকদিন পর্যন্ত বাচতে পারে। কিন্তু আমাদের কিছু ভুল এবং অবহেলার কারণে নিজের অজান্তেই আমরা আমাদের প্রিয় প্রাণীটির আয়ু কমিয়ে ফেলি। তাই আসুন জেনে নেই কি কি কারণে আপনার খরগোশ টার আয়ু কমতে থাকে এবং কি করলে আপনার খরগোশ টা সুস্থ্যভাবে বেশিদিন বাচতে পারে।
?১.বাসস্থান নির্বাচনে ভুলঃ
অনেকেই খরগোশ কে রাখার জন্য ছোট খাচা বেছে নেন যেটা একেবারেই করা ঠিকনা। এমন সাইজের খাচা নিতে হবে যেখানে সে ভালো ভাবে নড়াচড়া করতে পারে, লাফালাফি করতে পারে,খেলতে পারে। এর জন্য খাচার থেকে প্লেপেন বেশি উপযুক্ত। কারণ তারা মুভমেন্ট করতে না পারলে আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে যায় এবং তাদের আয়ু কমতে থাকে।
?২.ভুল ডায়েটঃ
খরগোশ এর সঠিক খাবার তাদের না দিলে তাদের আয়ু কমতে থাকে। খরগোশ এর প্রধান খাবার ঘাস এবং হ্যে। কিন্তু অনেকেই এসব না দিয়ে মানুষের খাবার দেন খরগোশ কে যেমন ভাত, রুটি, মুড়ি।এগুলো খাওয়ালে তারা সাথে সাথে মারা যায়না ঠিকই তবে আস্তে আস্তে তাদের আয়ু কমতে থাকে। তাই খরগোশ কে অবশ্যই সঠিক ডায়েট দিতে হবে।
?৩.সবসময় আটকে রাখাঃ
খরগোশরা আটকায় থাকতে পছন্দ করেনা। শুধু খরগোশ কেন, কোনো প্রাণীই বন্দি জীবন পছন্দ করেনা। অনেকেই থাকে যারা খাচায় খরগোশ পালেন যেটার কারণে অনেক রকমের শারীরিক এবং মানসিক উভয় ধরনের সমস্যা হতে পারে। সবসময় খাচায় রাখলে খরগোশ এর পায়ে সোর হ্যাক্স সহ আরও নানা রকমের সমস্যা হতে পারে। আবার সবসময় আটকে রাখলে তাদের মানষিক স্বাস্থ্য এর ও অবনতি হতে থাকে। আমাদের মনে রাখতে হবে, একটা প্রাণীর জন্য শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানষিক স্বাস্থ্যর গুরুত্ব রয়েছে। সারাক্ষণ খাচায় আটকায় রাখলে তাদের আয়ু আস্তে আস্তে কমে যায়।
?৪.পর্যাপ্ত সময় না দেয়াঃ
খরগোশদের সোশ্যাল এনিমেল বলা হয়। অর্থাৎ তারা সবার সাথে থাকতে পছন্দ করে, একা একা থাকতে পছন্দ করেনা। আপনাকে অবশ্যই তাদের পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। সময় না দিলে আস্তে আস্তে তাদের মানষিক স্বাস্থের অবনতি ঘটবে এবং আয়ু কমতে থাকবে।
?৫.অতিরিক্ত ব্রীডিংঃ
খরগোশ কে অত্যাধিক মাত্রায় ব্রীডিং করালে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে এবং আয়ু কমতে থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রে অল্প বয়সেই মারা যায়।
?৬.হ্যে বা শুকনা ঘাস পর্যাপ্ত পরিমাণে না দেয়াঃ
তাজা ঘাস এর থেকে হ্যে বা শুকনা ঘাসে পুষ্টি বেশি। তাই চেষ্টা করবেন হ্যে খাওয়ানোর অভ্যাস করা এবং বেশিরভাগ সময় হ্যে খাওয়ানোর। এতে তারা ভালো পুষ্টি পায় এবং স্বাভাবিক ভাবেই আয়ু কমতে রোধ করে। এছাড়া দাঁত এর সমস্যাও দূর হয় হ্যে খাওয়ানোর ফলে।
?৭.ভেট এর কাছে চেকআপ না করানোঃ
খরগোশদের কে একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর ভেট এর কাছে নিয়ে যেয়ে চেকাপ করানো উচিত। অন্তত ছয়মাস পরপর ভেট এর কাছে নিয়ে যেয়ে ডিওর্মিং করানো উচিত। এতে ওদের কৃমির সমস্যা হবেনা এবং ওরা সুস্থ থাকবে।
?৮.গ্রুমিং এবং দাঁতের যত্নে অবহেলাঃ
খরগোশ দের রোজ চিরুনি দিয়ে তাদের লোম আচড়ে দিতে হবে এবং ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। এগুলো না করলে তাদের লোম এবং স্কিনের ক্ষতি হয়। এছাড়া খরগোশ কে শুকনো ঘাস বা হ্যে না খাওয়ালে তাদের দাঁত বেড়ে যায় ফলে তারা খাওয়া দাওয়া করতে পারেনা এবং মারা যায়। এগুলো সঠিকভাবে পালন করতে না পারলে একটা খরগোশ এর আয়ু কমতে থাকে।
?৯. সঠিক নিরাপত্তা না দেওয়াঃ
খরগোশরা খুব ভীতু প্রকৃতির হয়। তারা সবসময় নিরাপদ স্থান খোজে। কুকুর বিড়াল বেজি সাপ এগুলো ওদেরকে সহজেই আক্রমণ করে এবং আক্রমণ করলে বাচানো কঠিন হয়ে যায় এবং অল্প বয়সেই একটা খরগোশ এর মৃত্যু হয়। তাই অবশ্যই খরগোশ এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
?১০.নিউটার অথবা স্পে না করানোঃ
যারা সিংগেল খরগোশ পালেন এবং ব্রীড করানোর পক্ষে না তাদের উচিত খরগোশ কে নিউটার/স্পে করায় নেয়া। কারণ যদি এডাল্ট হওয়ার পর খরগোশ কে আপনি ব্রীডিং এ না দেন তাহলে আস্তে আস্তে তার ওজন কমতে থাকে, অন্ডকোষ শুকিয়ে যেতে থাকে। ওরা হিটে আসলে এগ্রেসিভ হতে থাকে। ওদের এনার্জি লস হতে থাকে। এভাবে ওদের সমস্যা গুলো বাড়তে থাকে। এভাবে আস্তে আস্তে তাদের আয়ু ও কমতে থাকে।
তাই আপনার আদরের খরগোশটি কে দীর্ঘদিন আপনার কাছে রাখতে চাইলে উপরের বিষয়গুলো মেনে চলুন। ভালো থাকুন এবং ভালো রাখুন আপনাদের খরগোশকে।
ধন্যবাদ।?
Faozia Fariha
Admin
Rabbit Welfare Society of Bangladesh.
আমাদের গ্রুপ লিংক ঃ https://www.facebook.com/groups/rwsbd
আমাদের পেজ লিংক ঃ https://www.facebook.com/rwsbangladesh