Posted on

দেশি বিড়ালের যত্ন

প্রতিদিনই লিওর খাদ্যাভ্যাস ও যত্ন সম্পর্কিত নানা প্রশ্ন পেয়ে থাকি।

যেমন–লিওকে আমি কী খেতে দেই?-

দেশি বিড়ালকে কী করে গোলুমোলু করা যায়?

-লিওকে এত চকচকে কী করে রাখি?

বিশেষ করে ওর গায়ের সাদা অংশ।এসব প্রশ্নের উত্তরের পাশাপাশি চেষ্টা করছি লিওর খাদ্যাভ্যাস ও যত্নের একদম বেইসিক কিছু ব্যাপার সম্পর্কে ধারণা দেয়ার।

?#লিওর_খাদ্যাভ্যাসঃ-খাবার হিসেবে লিওকে কোনপ্রকার মসলা,লবণ ছাড়া সিদ্ধ মাছ,মাংস খেতে দেই।

– মাছ/মাংস সিদ্ধর এই পানিটা ফেলে দেই না। মাছ/মাংসের কাঁটা/হাড় বেছে ছোট ছোট টুকরো করে তা ওই সিদ্ধ করা পানির সাথে মিশিয়ে খেতে দেই। (যেহেতু অধিকাংশ বিড়ালেরই সাধারণ পানি খাওয়ার ব্যাপারে অনিহা দেখা যায়; তাই এভাবে খেতে দিলে পানিশূন্যতার ঝুঁকি সহজেই এড়ানো সম্ভব। এছাড়া সাধারণ পানি খেতে ওদের অনিহা থাকলেও ফিস/চিকেন স্টক ওরা বেশ পছন্দ করেই খায়।)এভাবে ফিস/চিকেন স্টক খাওয়ানোর পরেও আমি একটি নির্দিষ্ট পাত্রে নির্দিষ্ট স্থানে লিওর জন্য পানি রেখে দেই। যেন ওর পিপাসা পেলে ও সহজেই তা পূরণ করতে পারে।

– বাজার থেকে কেনা কোন প্রকার ক্যাটফুডের পরিবর্তে ট্রিট হিসেবে মুরগির কলিজা, পা ও কাঁচকি শুটকি খেতে দেয়াই পছন্দ করি।(বাজার থেকে কেনা শুটকি হলে তা বেশ কয়েকবার হালকা গরম পানিতে ভাল করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রোদে শুকিয়ে শুকনো তাওয়া/ওভেনে মচমচে করে ভেজে নিয়ে এয়ারটাইট পাত্রে সংরক্ষণ করি।মুরগির পা এর নখ কেটে ফেলে দিয়ে সিদ্ধ করে আঙুলগুলো আলাদা করে খেতে দেই। লিও হাড় কিংবা মাছের কাঁটা খায় না।আর হ্যাঁ, কলিজা সিদ্ধর পানিটা কিন্তু খেতে দেইনা।ওটা ফেলে দেই। কলিজা বাজারের মুরগির দোকান থেকে কেনার পরিবর্তে চেষ্টা করবেন বেংগল মিট, প্রিন্সবাজার,স্বপ্ন বা অন্য যেকোন সুপারশপ থেকে কিনতে। কারণ মুরগির দোকানগুলোতে রক্ত ও অনান্য বর্জ্য এর সাথে প্লাস্টিকের ড্রামে অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় কলিজা দীর্ঘসময় ধরে সংরক্ষণ করা হয় বলে তা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত হবার সম্ভাবনা খুবই বেশি থাকে। ফলে বিড়ালের ফুড পয়জনিং হবার ঝুঁকি তৈরি হবে।)

– লিওর খাদ্য তালিকায় নতুন কিছু যোগ করার আগে অবশ্যই জেনে নেয়ার চেষ্টা করি, তা লিওর জন্য কতটা উপকারী হবে কিংবা তা থেকে সামান্যতম ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে কিনা।

-লিওকে কখনোই দুধ,চকলেট,চানাচুর, চিপস,আইসক্রিম,মিষ্টি,কেক এইসব মুখরোচক খাবার খেতে দেইনা। লিও বায়না করলেও “না”।

❌ – এছাড়া বারান্দায় গম ও লেমনগ্রাস লাগানো রয়েছে। যার কচি পাতা গুলো লিও নিজ দায়িত্বে খেয়ে নেয়।

– ভ্রমণের সময় ছাড়া লিওকে কোন প্রকার ড্রাই ক্যাটফুড একদমই দেই না। এসব ক্যাটফুডে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নামমাত্রও থাকেনা। উপরন্ত সয়া,কৃত্রিম রঙ আর ফ্লেভারে তৈরি ক্যাটফুড অন্য খাবারের প্রতি ওদের রুচি নষ্ট করে দেয়। এসব ড্রাই ক্যাটফুড বলা চলে একরকম স্লো পয়জনিং এর মত কাজ করে; যা ধীরে ধীরে ওদের কিডনি জটিলতা সৃষ্টি করে,অকেজো করে দেয়।

-লিওকে কখনোই প্লাস্টিক বা মেলামাইনের পাত্রে খেতে দেইনা। বিড়ালকে প্লাস্টিক বা মেলামাইনে খেতে দিলে তা থেকে ওদের মুখের চারপাশের ত্বকে ফাংগাল ইনফেকশন হবার ঝুঁকি থাকে। খাবার ও পানির পাত্র হিসেবে তাই স্টিল বা কাচের পাত্র ব্যবহার করুন।খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত আরও যেসব প্রশ্ন পেয়েছি

-প্রঃ আপু লিওর মাছ/মাংসের সাথে কি ভাত মেখে দেন?উঃ কখনো দিলেও তা নামমাত্র।প্রঃ আপনাদের জন্য রান্না করা মাছ/মাংস কি লিওকে খেতে দেন?উঃ সাধারণত দেই না। দিলেও পানিতে ভাল করে ধুয়ে তারপর খেতে দেই।

প্রঃ আপু আমার বিড়াল খাওয়া নিয়ে খুব যন্ত্রণা করে,কি করবো?উঃ খাবার নিয়ে জ্বালাতন লিও-ও করে। তাই একই খাবার একটানা না দিয়ে চেষ্টা করি ওর পছন্দ অনুযায়ী খাবারের তালিকায় ভিন্নতা আনতে। (সাধারণত যাদের বাসায় একটি মাত্র বিড়াল থাকে তাদের সবাইকেই কম/বেশি এই সমস্যায় পড়তে হয়। একমাত্র হলে মানুষের বাচ্চা যেমন খাবার নিয়ে মাকে পীড়া দেয়,বিড়ালও ব্যতিক্রম নয়।?)

#লিওর_যত্নঃপ্রঃ লিওকে এত চকচকে কি করে রাখি?বিশেষ করে ওর গায়ের সাদা অংশ। উঃ লিওকে আলাদা করে পরিষ্কার রাখার প্রয়োজন হয়নি কখনো। যেহেতু ও বাসাতেই থাকে তাই ওর গায়ে ময়লা,ধুলো লাগার সুযোগ নেই। তবুও ঘরের কর্নার/আড়াল জায়গাগুলো যেখানে ও খেলতে এবং লুকাতে পছন্দ করে চেষ্টা করি লিওর চলাচলের এবং লুকানোর সেইসব জায়গাগুলো সবসময় পরিষ্কার রাখতে। তবুও লিও কখনোই যে ধুলো ময়লা মাখে না, এমন নয়। প্রায়ই সে বারান্দার টবের মাটি খুঁড়ে পা,মাথা নোংরা করে নেয়। সেক্ষেত্রে গোসলের পরিবর্তে ভিজা কাপড়ের সাহায্যে পরিষ্কার করে দেই।গরমের দিনগুলোতে লিওকে মাসে সর্বোচ্চ এক-দু বার হালকা গরম পানিতে গোসল করিয়ে দেই। আর পুরো শীতজুড়ে একবারও নয়। বিড়ালের জন্য গোসল অত্যাবশ্যকীয় নয়। বিড়াল একটি পরিচ্ছন্ন প্রাণী। নিজেকে পরিষ্কার রাখা ওদের সহজাত প্রবৃত্তি। বিড়ালের ত্বক মানুষের ত্বকের তুলনায় অনেক বেশি সংবেদনশীল। তাই অতিরিক্ত গোসলের ফলে ওদের স্কিন ব্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত, ত্বকে ইনফেকশনসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে

#গুরুত্বপূর্ণ_কিছু_কথাঃ১. ভুলেও বিড়ালকে নাপা/প্যারাসিটামল জাতীয় কোন ওষুধ খাওয়ানো যাবেনা এবং স্যাভলন/ডেটল জাতীয় কিছু ব্যবহার করা যাবেনা।(নাপা/প্যারাসিটামল ওদের জন্য বিষস্বরূপ এবং স্যাভলন/ডেটল ওদের ত্বক পুড়িয়ে ফেলে।)বিড়ালের ছোট ঘা, ক্ষত এর ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ভায়োডিন ১০% দিয়ে পরিষ্কার করে নেবানল পাউডার লাগাতে পারেন।

২. বিড়ালের শরীরে উঁকুন হলে মানুষের জন্য তৈরি কোন প্রকার উঁকুননাশক সাবান,শ্যাম্পু,তেল ব্যবহার করবেন না। পাশাপাশি উঁকুন তাড়াতে ন্যাপথালিন, কাপড়ধোয়ার বল সাবান কিংবা অন্য কোন পোকানাশক কিছু ওর শরীরে ব্যবহার করবেন না।

৩. বিড়ালের গায়ের সাদা অংশ রংঙিন করতে কোন প্রকার রঙ,মেহেদী ব্যবহার হতে বিরত থাকুন।

৪. ভেট এর পরামর্শ ব্যতীত ওদের কোন প্রকার ওষুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন। কারণ ওদের বয়স ও ওজনের উপর নির্ভর করে ওষুধের মাত্রা নির্ধারিত হয়।

৫. বিড়ালের বয়স ৩ মাস হলেই অবশ্যই ওদেরকে ফ্লু এর ভ্যাক্সিন দেয়াতে হবে। মনে রাখবেন ফ্লু হলে তখন চিকিৎসা করলেও বেঁচে যাওয়ার নিশ্চয়তা থাকেনা।☹️

©তসুন তনিমা ন্যান্সি

#রসগোল্লা_লিও#গৃহপালিত_সিংহবাচ্চা

মাশাআল্লাহ

আল্লাহুম্মা বারিক লাহু

আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন ঃ-

Cat Welfare Society Of Bangladesh

facebook link :-  https://www.facebook.com/groups/catwsbd

Cat Rights Watch Bangladesh

facebook link :-  https://www.facebook.com/groups/crwbd

Cat Association Of Bangladesh

facebook link :-  https://www.facebook.com/groups/catwsb

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *