Posted on

পোষা বিড়ালকে সুস্থ, সবল রাখার উপায়:-

?

??গৃহে পোষা প্রানী থাকলে অনেকেই ভাবে ওদের আবার যত্ন করতে হয় ? ওরা রাস্তায় যেভাবে থাকে ঘরেও সে ভাবে থাকবে বা আমাদের অবশিষ্ঠ গুলো খেয়ে পরে বেচে যাবে। কিন্তু বিষয়টা মোটেও তেমন না। রাস্তায় থাকলে ওরা তখন কিভাবে অসুস্থ হচ্ছে, কখন মারা যাচ্ছে, শরীরের অবস্হা কেমন টা মাঝে মাঝে ওদের দেখে আমরা বুঝতে পারি না। ওরা কয়টা সুস্থ আছে কয়টা অসুস্থ আছে আমরা সেটারও খবর রাখিনা। কিন্তু গৃহে যারা পোষা প্রাণী হিসেবে থাকে তারা অসুস্থ হলে ওদের সুস্থ করা আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পরে।

?? ওদের সুস্থ রাখতে যেগুলো শুরুতেই জানতে হবে সেগুলো হলো-

?বিড়ালের গর্ভাশয় অপসারণ ও খোজাকরণ ( spay বা neuter)অনেকেই তাদের পোষা বিড়ালের গর্ভাশয় অপসারণ ও খোজাকরণ পছন্দ করেনে না। কিন্তু এ প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ ও অনেক সমস্যারই সমাধান করতে পারে এই ব্যবস্থা। বিড়ালের গর্ভাশয় অপসারণ বা খোজা করা হলে প্রাণিটির প্রসাবের গন্ধ শুঁকে পুরুষ বা মেয়ে বিড়াল চেনার যে ক্ষমতা তা কমে যায়। বিড়ালের এই ক্ষমতা থাকার কারণে অন্য বিড়ালের সঙ্গে লড়াই করার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। কারণ দুটি সমলিঙ্গের বিড়ালের মধ্যে লড়াইয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। গর্ভাশয় অপসারণ ও খোজাকরণের ফলে বিশেষ করে মেয়ে বিড়ালের তাপচক্র দূর হয় এবং তারা পুরুষ সঙ্গী সাধারণত কম খোঁজে। তাই এ পদ্ধতি অনেক সমস্যারই সমাধান হিসেবে কাজ করে।

পশুচিকিৎসক বা (vet) এর কাছে নিয়ে যাওয়া:-মানুষের যেমন চেকআপের প্রয়োজন হয় ঠিক তেমনই পশুপাখিদেরও চেকআপের প্রয়োজন পরে। অনেকসময় আপনি আপনার বিড়ালের সব রোগ ধরতে পারবেন না। সেটা ভেটের কাছে গিয়েই জানতে পারবেন। তাই চেষ্টা করবেন প্রতি বছর একবার হলেও ভেটের থেকে চেকআপ করে আনানো । এতে কোনো রোগ হলে খুব সহজেই সারিয়ে বিড়ালকে বাঁচানো সম্ভব।সে সাথে খাবার বিশেষজ্ঞ থেকে খাবার বিষয়ে জেনে নেওয়া। মনে রাখবেন সঠিক খাবারের মাধ্যমে বিড়ালের আয়ু বাড়ে।

? পর্যাপ্ত ঘুমানোর জায়গা:-আমরা জানি ছোটো বাবুরা ছোটো থাকতে প্রচুর ঘুমায়। এর ফলে ওদের দেহের বিকাশ ঘটে। ঠিক তেমনি বিড়ালও ওদের জীবনের ৭০% ভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিতে সক্ষম। যার জন্য ওদের ঘুমের মাধ্যমেই শরীর বৃদ্ধি পায়। তাই চেষ্টা করবেন ওরা যেনো সঠিক ভাবে ঘুমাতে পারে। ঠান্ডার সময় ফ্লোরে না ঘুমায়।পরিষ্কার ঘুমানোর জায়গা পায় এবং ওদের ঘুমানোর জায়গা যেনো খুব আরামের হয়।

? বিড়ালের পুষ্টি:-চেষ্টা করবেন সঠিক ডায়েটটা ফলো করানোর, পশু চিকিৎসকের সাথে কথা বলে সম্পূর্ণ ডায়েট জানার। বাজারে ভালো ব্র্যান্ডের কোন্ তরল এবং শুষ্ক খাবারটা ভালো সেটাও জেনে নিন।আপনার লোমশ এই বন্ধুটির জন্য কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় করবেন তা একান্তই আপনার নিজের ব্যাপার। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে পুষ্টিকর খাবার অন্যতম যা আপনার বিড়ালটিকে সুস্থ-সবল রাখবে। বিড়ালের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার ক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবার ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

?বিড়ালকে চাপ বা ভীতিমুক্ত রাখুন:-প্রতিদিন ভীতিকর পরিস্থিতি বা চাপের সম্মুখীন হওয়ার বিষয়টি বিড়ালের স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। নিরাপদ ও কোলাহলমুক্ত একটু উঁচু জায়গায় বিড়ালের থাকার জায়গা করা হলে তা তাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো হয়। বিড়াল একটি স্বাধীনচেতা প্রাণি। আর এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই বেশিরভাগ বিড়াল প্রেমিক এই প্রাণিকে পছন্দ করে। বিড়াল যখন জরোসড়োক হয়ে ঘরের এক কোণে বসে থাকে তখন সে গোটা পরিবেশটা পর্যবেক্ষণ করতে পছন্দ করে। বিভিন্ন ধরনের খেলনা সামগ্রী বিড়ালের পছন্দ এবং এগুলো নাগালের কাছে থাকলে বিড়াল সাধারণত চিন্তামুক্ত থাকে। বাসায় পোষা বিড়াল ইঁদুর বা কোনো প্রাণি শিকার করার সুযোগ পায় না। তাই খেলনা সামগ্রী পেলে তারা এগুলোর সঙ্গে শিকার ধরার ভান করে খেলা করে। এতে বিড়ালের শারীরিক অনুশীলন হয় এবং এতে সে অনেক মজা পায়।

? বিড়ালকে বাসায় রাখা:- যারা গৃহে বিড়াল পালেন চেষ্টা করবেন ওদের সবসময় বাসার মধ্যেই রাখার । বাইরে গেলে দেখা যাবে বিভিন্ন রোগ নিয়ে আসবে। অনেকসময় আঘাত নিয়েও আসতে পারে। ক্ষত বেশি হলে সারানো মুশকিল। অনেকে আবার আপনার বিড়াল চুরিও করে নিতে পারে। বিড়াল সাধারণত বাসার বাইরে খেলা করতে পছন্দ করে। কিন্তু সমস্যা হলো, বাইরে অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে পারে আপনার বিড়ালটি। বাইরের বিড়াল, কুকুর, দুষ্ট মানুষ বা বেপরোায়া ড্রাইভারের খপ্পরে পড়তে পারে আপনার বিড়ালটি।প্রায় দেখা যায় বিড়ালের হারানো পোস্ট। তাই চেষ্টা করবেন ওদের সব সময় বাসায় রাখার।

? আচরণগত পরিবর্তন:-আপনার বিড়ালের আচরণগত কোনো পরিবর্তন ঘটলো কি না সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। যদি কোনো পরিবর্তন লক্ষ করেন, তাহলে বুঝবেন এটি কোনো রোগের লক্ষণ যার জন্য দ্রট্টু ব্যবস্থা নিতে হবে। অতিরিক্ত ঘুম, ওজন কমা, গোঙানি, দৈহিক ভঙ্গিমায় পরিবর্তন প্রভৃতি বিষয় কোনো রোগের বার্তা বহন করে। আপনি যখন চিকিৎসকের নিকট বিড়ালকে নিয়ে যাবেন, তখন তার সকল আচরণ কিন্তু আপনাকেই ডাক্তারের কাছে বলতে হবে। এ জন্য অবশ্যই ভালভাবে বিড়ালের আচরণ পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

?সময়মতো ভ্যাকসিন প্রদান:- তিনমাস বয়স হলে বিড়ালকে flu এবং rabies এর ভ্যাকসিন দেওয়া খুব জরুরী। এই ভ্যাকসিন ঠাণ্ডা এবং জলাতংক থেকে বাঁচায়। সঠিক চিকিৎসা না করালে Flu তে বিড়াল মারা যায়। ঘরে অন্য বিড়াল থাকলে সেগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাই সময়মতো ভ্যাকসিন প্রদান করা জরুরি।প্রথম ভ্যাকসিন ৩ মাস হলে দিতে হয় এবং flu এবং rabies এর ভ্যাকসিন ছয় মাস থেকে একবছরে পর পর দেওয়া ভালো।

? কৃমিনাশক ওসুধ খাওয়ানো:-কৃমির জন্য খাবারে অনীহা, পি পটিতে সমস্যা সহ আরো রোগ হতে পারে ।সেগুলো থেকে বাচার জন্য কৃমি নাশক ওসুধ খাওয়ানো দরকার। নিয়মানুযায়ী ৩মাস বয়স হলে কৃমির ঔষধ দিতে হয়। কিন্তু এর আগেই সমস্যা দেখা দিলে কৃমির সিরাপ দেওয়া হয়।

?আকর্ষণীয় লিটার বক্স:-বিড়ালের সঠিক পরিচর্যা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি পরিষ্কার লিটার বক্স রাখা খুব জরুরি। লিটার বক্স যত আকর্ষণীয় হবে বিড়াল ততই সেখানে গিয়ে পি পটি করতে চাইবে। সারাঘর নোংরা করবে না। অনেক বিড়াল আবার বেশি সুগন্ধওয়ালা লিটার বক্স পছন্দ করে না। তাই বিড়ালের পছন্দ বুঝে লিটার বক্স আনবেন। সে সাথে ওরা একটি অন্ধকার বা জনবহুল কম জায়গায় পি পটি করতে পছন্দ করে তাই লিটার বক্স সেখানেই রাখবেন। মনে রাখবেন বিড়ালের সংখ্যা বেশি হলে লিটার বক্সের সংখ্যাও বেশি রাখতে হবে এবং সবসময় সেটা পরিষ্কার রাখতে হবে।? বিড়ালের নিষিদ্ধ স্থান:-শিশুরা যেমন তাদের নিষিদ্ধ স্থানে ঘুরাঘুরি বেশি করে বিড়ালরাও এই কাজে তুখোড় পারদর্শী। খেয়াল রাখবেন গাছের ডালে বেশি উচুতে যেনো না উঠে, বাসা ২তালার উপরে হলে খেয়াল রাখবেন যেনো লাফ দিয়ে পরে না যায়। ঘরের চুলা, সে সাথে বৈদ্যুতিক তার যেনো বিড়ালের নাগালে না আসে এবং কমোডে যেনো বিড়ালের বাচ্চা পরে না যায়।

Faisa Musarrat

আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন ঃ-

Cat Welfare Society Of Bangladesh

facebook link :-  https://www.facebook.com/groups/catwsbd

Cat Rights Watch Bangladesh

facebook link :-  https://www.facebook.com/groups/crwbd

Cat Association Of Bangladesh

facebook link :-  https://www.facebook.com/groups/catwsb

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *